বাইক এক্সিডেন্ট - পর্ব -১
১১-১১-২০১৭
.সেই দিন নভেম্বরের এগার তারিখ শনিবার ছিল, সময়ও এগারটার কাটা ছুঁই ছুঁই করছে অন্য সময় মহিউদ্দিন ভার্সিটি থাকে, আজকে তার ভার্সিটি যাওয়ার টাইম বিকালে, কয়েকদিন থেকে তার মেহমান হয়ে আছি, হঠাৎ মহি বলল চল আজকে একটু ভাটিয়ারী যাই (যদিওবা এর আগে অনেকবার যাওয়ার প্ল্যান করেও যাওয়া হয়নাই) , সে আমাকে বলল অনেক দিন থেকে একটা ওয়াশিং মেশিনের জন্য প্যান প্যান করতাসছ (আমি আবার কাপড় ধৌয়ার ব্যাপারে অলস, এখনো কয়েক মাসের আধৌয়া কাপড় পড়ে আছে) ওখানে ভাল মানের রিকন্ডিশনাল জাহাজি মেশিন পাওয়া যায় দামেও সস্তা আবার টেকসই । সাথে আমিও একটু IIUC থেকে ঘুরে আসব কিছু কাজ আছে বলল মহি ।
.
আমি আমতা আমতা করে না না করছি ভান ধরছিলাম মূলত, না হয় যাওয়ার জন্য এক পায়ে খাড়া, না বলতে গেলে আঙুলের উপরে খাড়া( মাঝে মধ্যে বাইক নিয়ে দুইজনই ঘুরাঘুরি করি অপডে তে) , আবার বাহানা ধরলাম বেটা আমার হ্যালমেট নাই, সে হেসেই বলল চিন্তা করিস না তুর জন্য নারিকেলের খোসা দিয়ে স্পেশাল হ্যালমেট অর্ডার করে বানিয়ে আনব, এভাবে হাসাহাসি করতে করতেই বেরিয়ে পড়লাম, ও হ্যাঁ গাড়িতে তেল ছিল না, তাই রিজার্ভ তেল দিয়ে উল্টো গনী বেকারীর অয়েল পাম্পে গেলাম, তেল ঢুকার পর মিটার চেক করলাম ৬৭০০ ছিল, এবার পরিকল্পনা অনুযায়ী আগে IIUC তে যাব,ফিরতি পথে ভাটিয়ারী নামব ওখানে পরিচিত এক ভাই আছেন সাথে উনাকেও নিব।
.
এবার যথারীতি আমাদের যাত্রা শুরু, অলিগলি চিপাচাপা দিয়ে অল্প সময়ে অলংকার মোড়ে পৌছলাম, এসব চিপাচাপা আমি তেমন চিনি না,মহিই ভাল মত চিনে সেই বাইক ড্রাইভ করছিল, ঢাকা - চট্টগ্রাম ট্রাংক রোড় রাস্তাও মোটামুটি ফাঁকা নকের পিঠের মত মসৃণ, এমন রাস্তা দেখলে যে কেউ বুলেট গতিতে গাড়ী চালাতে চাইবেই , বাইক হলে তো কথাই নেই, আমারা কিন্তু সেরকম বেপরোয়া গতিতে যাচ্ছি না মোটামুটি ভাবেই যাচ্ছিলাম,খুব বেশি বাতাস হঠাৎ মনে হল আমার পশম হাত থেকে ছিড়েই উড়ে যাবে( ঘন ও লম্বা পশম মনে হয় তাই মনে হইছিল) , স্পিড মিটারে থাকালাম স্পিড মিটারের কাঁটা ৮৫-৮৬ ছুঁই ছুঁই করছে গাড়িও দেখি একটু কম্পমান, মহিরে বললাম স্পিড কমা গাধা ( মনে মনে বললাম যুদ্ধে যাচ্ছি নাকি?) সে তাতক্ষনিক গতি কমিয়ে পেলল, ঐ যা বলছিলাম মসৃণ ফাঁকা রাস্তা স্পিড নিজের অজান্তেই বেড়ে যায়।
.
একটু পরে সিটি গেইটের দেখা পেলাম, এইতো মনে হয় কাছাকাছি এসে গেলাম, যদিও IIUC আমি ঠিকমতো চিনিনা অনেক আগে একবার গেছিলাম, মনে করলাম মহি ভাল মত চিনে, গড়ি চলছে তো চলছেই রাস্তা যেন শেষ হচ্ছে না, মাঝেমধ্যে স্পিড বেড়ে গেলে আবারও সতর্ক করে দেই, স্পিড ব্ল্যান্সে নিয়ে আসে, স্পিড মিটারে থাকালাম ৬৭৪০ হয়ে গেল তেল নেয়ার সময় ৬৭০০ ছিল, মহিরে বললাম "কিরে ওডা ঢাকা যাইতাসস নাকি এত দূর ক্যামনে হয়?' সামনে কিছু দোকান দেখে দাড়ালাম, ওদের জিজ্ঞাস করলাম, "ভাইজান, IIUC আর কত দূর সামনে? " ওরা আমাদের দিকে হা করে থাকিয়ে রইল, বিরক্ত হয়ে অন্য দোকানে গেলাম কিছু টুকটাক জিনিস কিনে জিজ্ঞাস করলাম IIUC কত দূর আর এট কোন জায়গা ? দোকানি বলল "ভাই এটা সীতাকুণ্ড বাজান আপনারা IIUC থেকে মিনিমাম ৩০ মিনিটের রাস্তা ফেলে আসছেন" এবার পড়ল মাথায় বাজ, মহি আমাকে বলে তুই গেইট দেখস নাই? আমি বলি আমি তো চিনি না,ভাবলাম তুই চিনস! এবার উল্টো যাত্রা শুরু।
.
আমাদের বাইক স্বাভাবিক গতিতেই চলছে এভাবে প্রায় ৭কিলোমিটার এগিয়ে গেছি ,ইতোমধ্যে কোন গাড়ী আমরা ওভারটেক করি নাই, যেহেতু ওয়ান বাই রোড় রাস্তার বাম পাশ দিয়েই সেইভ পয়েন্ট ধরে যাচ্ছি,অনেক গাড়ী আমাদের ওভারটেক করে গেছে, ১৫-২০ হাত সামনে একটা ১০চাকার ট্রাক দেখা যাচ্ছে যেটা একটু আগেই আমাদের ওভারটেক করছে, হঠাৎ দেখি কোন সিগন্যাল ছাড়াই গাড়িটা বাম দিকে মোড় ঘুরিয়ে দিল, মহি বলে উঠল সামনের গাড়ী বামে ঢুকতাছে,সে কথা শেষ করার আগেই আমি বললাম দ্রুত ব্র্যাক চাপ,ডান পাশ দিয়েও যাওয়ার সুযোগ নাই গাড়ী টা পুরা রাস্তা ব্লক করে ফেলছে, আমি উচ্চস্বরে দোয়া ইউনুস "লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবাহানাকা ইন্নি কুন্তু মিয়াজ-জলেমিন" পড়া শেষ করার আগেই স্বজোরে আমাদের বাইক ট্রাকের টুল বক্সে ধাক্কা লেগেই ছিটকে পড়ি।
.
একটু পরেই দেখতে পাই আমি গাড়ির পিছনের চাকার অগ্রভাগে, মহি সামনের চাকার পিছনের সাথে ঘেঁষে আছে,বাইকটা ট্রাকের নিচে মাঝখানে, ট্রাক তখন স্টপ করে ফেলছে,গাড়ি একটু সামনে গেলে আমি চাকায় পিষে যাব আবার পিছনে দিলে মহি পিষে যাবে, আমি অজ্ঞান হই নাই উঠেতে গিয়ে বাম পায়ে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করলাম,ব্যাথার ছুটে মাথা ঝিম ঝিম করছে, কোন রকম দাত মুখ খিছে ঐ অবস্থায় হামাগুড়ি দিয়ে মহিরে নিচ থেকে একটু বাইর করে ধপাস করে মাঠিতে শুয়ে পড়লাম,অবাক করা কান্ড ছিল যে আমার মাথায় ক্যাপ ও সান গ্লল তখনো ছিল, এত বড় ধাক্কায় হারিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, দুই জনই ধুলোমাখা যেমনটা ছোট বেলায় হাডুডু খেলা বা রাস্তায় খেলা করতে গিয়ে গড়াগড়ি করলে হয়ে যেতাম, মহি অজ্ঞান ছিল তার মুখ ও জামা-কাপড় দেখি রক্তাক্ত।
.চলমান...........
.সেই দিন নভেম্বরের এগার তারিখ শনিবার ছিল, সময়ও এগারটার কাটা ছুঁই ছুঁই করছে অন্য সময় মহিউদ্দিন ভার্সিটি থাকে, আজকে তার ভার্সিটি যাওয়ার টাইম বিকালে, কয়েকদিন থেকে তার মেহমান হয়ে আছি, হঠাৎ মহি বলল চল আজকে একটু ভাটিয়ারী যাই (যদিওবা এর আগে অনেকবার যাওয়ার প্ল্যান করেও যাওয়া হয়নাই) , সে আমাকে বলল অনেক দিন থেকে একটা ওয়াশিং মেশিনের জন্য প্যান প্যান করতাসছ (আমি আবার কাপড় ধৌয়ার ব্যাপারে অলস, এখনো কয়েক মাসের আধৌয়া কাপড় পড়ে আছে) ওখানে ভাল মানের রিকন্ডিশনাল জাহাজি মেশিন পাওয়া যায় দামেও সস্তা আবার টেকসই । সাথে আমিও একটু IIUC থেকে ঘুরে আসব কিছু কাজ আছে বলল মহি ।
.
আমি আমতা আমতা করে না না করছি ভান ধরছিলাম মূলত, না হয় যাওয়ার জন্য এক পায়ে খাড়া, না বলতে গেলে আঙুলের উপরে খাড়া( মাঝে মধ্যে বাইক নিয়ে দুইজনই ঘুরাঘুরি করি অপডে তে) , আবার বাহানা ধরলাম বেটা আমার হ্যালমেট নাই, সে হেসেই বলল চিন্তা করিস না তুর জন্য নারিকেলের খোসা দিয়ে স্পেশাল হ্যালমেট অর্ডার করে বানিয়ে আনব, এভাবে হাসাহাসি করতে করতেই বেরিয়ে পড়লাম, ও হ্যাঁ গাড়িতে তেল ছিল না, তাই রিজার্ভ তেল দিয়ে উল্টো গনী বেকারীর অয়েল পাম্পে গেলাম, তেল ঢুকার পর মিটার চেক করলাম ৬৭০০ ছিল, এবার পরিকল্পনা অনুযায়ী আগে IIUC তে যাব,ফিরতি পথে ভাটিয়ারী নামব ওখানে পরিচিত এক ভাই আছেন সাথে উনাকেও নিব।
.
এবার যথারীতি আমাদের যাত্রা শুরু, অলিগলি চিপাচাপা দিয়ে অল্প সময়ে অলংকার মোড়ে পৌছলাম, এসব চিপাচাপা আমি তেমন চিনি না,মহিই ভাল মত চিনে সেই বাইক ড্রাইভ করছিল, ঢাকা - চট্টগ্রাম ট্রাংক রোড় রাস্তাও মোটামুটি ফাঁকা নকের পিঠের মত মসৃণ, এমন রাস্তা দেখলে যে কেউ বুলেট গতিতে গাড়ী চালাতে চাইবেই , বাইক হলে তো কথাই নেই, আমারা কিন্তু সেরকম বেপরোয়া গতিতে যাচ্ছি না মোটামুটি ভাবেই যাচ্ছিলাম,খুব বেশি বাতাস হঠাৎ মনে হল আমার পশম হাত থেকে ছিড়েই উড়ে যাবে( ঘন ও লম্বা পশম মনে হয় তাই মনে হইছিল) , স্পিড মিটারে থাকালাম স্পিড মিটারের কাঁটা ৮৫-৮৬ ছুঁই ছুঁই করছে গাড়িও দেখি একটু কম্পমান, মহিরে বললাম স্পিড কমা গাধা ( মনে মনে বললাম যুদ্ধে যাচ্ছি নাকি?) সে তাতক্ষনিক গতি কমিয়ে পেলল, ঐ যা বলছিলাম মসৃণ ফাঁকা রাস্তা স্পিড নিজের অজান্তেই বেড়ে যায়।
.
একটু পরে সিটি গেইটের দেখা পেলাম, এইতো মনে হয় কাছাকাছি এসে গেলাম, যদিও IIUC আমি ঠিকমতো চিনিনা অনেক আগে একবার গেছিলাম, মনে করলাম মহি ভাল মত চিনে, গড়ি চলছে তো চলছেই রাস্তা যেন শেষ হচ্ছে না, মাঝেমধ্যে স্পিড বেড়ে গেলে আবারও সতর্ক করে দেই, স্পিড ব্ল্যান্সে নিয়ে আসে, স্পিড মিটারে থাকালাম ৬৭৪০ হয়ে গেল তেল নেয়ার সময় ৬৭০০ ছিল, মহিরে বললাম "কিরে ওডা ঢাকা যাইতাসস নাকি এত দূর ক্যামনে হয়?' সামনে কিছু দোকান দেখে দাড়ালাম, ওদের জিজ্ঞাস করলাম, "ভাইজান, IIUC আর কত দূর সামনে? " ওরা আমাদের দিকে হা করে থাকিয়ে রইল, বিরক্ত হয়ে অন্য দোকানে গেলাম কিছু টুকটাক জিনিস কিনে জিজ্ঞাস করলাম IIUC কত দূর আর এট কোন জায়গা ? দোকানি বলল "ভাই এটা সীতাকুণ্ড বাজান আপনারা IIUC থেকে মিনিমাম ৩০ মিনিটের রাস্তা ফেলে আসছেন" এবার পড়ল মাথায় বাজ, মহি আমাকে বলে তুই গেইট দেখস নাই? আমি বলি আমি তো চিনি না,ভাবলাম তুই চিনস! এবার উল্টো যাত্রা শুরু।
.
আমাদের বাইক স্বাভাবিক গতিতেই চলছে এভাবে প্রায় ৭কিলোমিটার এগিয়ে গেছি ,ইতোমধ্যে কোন গাড়ী আমরা ওভারটেক করি নাই, যেহেতু ওয়ান বাই রোড় রাস্তার বাম পাশ দিয়েই সেইভ পয়েন্ট ধরে যাচ্ছি,অনেক গাড়ী আমাদের ওভারটেক করে গেছে, ১৫-২০ হাত সামনে একটা ১০চাকার ট্রাক দেখা যাচ্ছে যেটা একটু আগেই আমাদের ওভারটেক করছে, হঠাৎ দেখি কোন সিগন্যাল ছাড়াই গাড়িটা বাম দিকে মোড় ঘুরিয়ে দিল, মহি বলে উঠল সামনের গাড়ী বামে ঢুকতাছে,সে কথা শেষ করার আগেই আমি বললাম দ্রুত ব্র্যাক চাপ,ডান পাশ দিয়েও যাওয়ার সুযোগ নাই গাড়ী টা পুরা রাস্তা ব্লক করে ফেলছে, আমি উচ্চস্বরে দোয়া ইউনুস "লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবাহানাকা ইন্নি কুন্তু মিয়াজ-জলেমিন" পড়া শেষ করার আগেই স্বজোরে আমাদের বাইক ট্রাকের টুল বক্সে ধাক্কা লেগেই ছিটকে পড়ি।
.
একটু পরেই দেখতে পাই আমি গাড়ির পিছনের চাকার অগ্রভাগে, মহি সামনের চাকার পিছনের সাথে ঘেঁষে আছে,বাইকটা ট্রাকের নিচে মাঝখানে, ট্রাক তখন স্টপ করে ফেলছে,গাড়ি একটু সামনে গেলে আমি চাকায় পিষে যাব আবার পিছনে দিলে মহি পিষে যাবে, আমি অজ্ঞান হই নাই উঠেতে গিয়ে বাম পায়ে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করলাম,ব্যাথার ছুটে মাথা ঝিম ঝিম করছে, কোন রকম দাত মুখ খিছে ঐ অবস্থায় হামাগুড়ি দিয়ে মহিরে নিচ থেকে একটু বাইর করে ধপাস করে মাঠিতে শুয়ে পড়লাম,অবাক করা কান্ড ছিল যে আমার মাথায় ক্যাপ ও সান গ্লল তখনো ছিল, এত বড় ধাক্কায় হারিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, দুই জনই ধুলোমাখা যেমনটা ছোট বেলায় হাডুডু খেলা বা রাস্তায় খেলা করতে গিয়ে গড়াগড়ি করলে হয়ে যেতাম, মহি অজ্ঞান ছিল তার মুখ ও জামা-কাপড় দেখি রক্তাক্ত।
.চলমান...........
Comments
Post a Comment